শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৭

Film Poster beside the corner wall

অটো বা রিকাশা থেকে আড় চোখে বা ফ্যাল ফ্যাল করে চলচিত্রের পোস্টার এর এর দিকে তাকিয়ে থাকার মজা অনেক। কখনো তার নান্দনিকতার সৌন্দর্য আমাদেরকে আনন্দ দেয় কখনো তার হাস্যকর উপস্থাপন দেয় বিনোদন (আটার বস্তা গরম মশলা নাইকারা নাই টাইপ ড্রেস পইরা মাঝে মাঝে এখনো আমাদের পৈচাশিক অনুভুতিও দেয়!!!)। 

রাস্তার পাশের দেয়াল গুলো জুড়ে ভুইত্তামারা সাইজের বিশাল বিশাল সব পোস্টার আজকাল ওয়াল পেপার এর কাজ করে দিচ্ছে, যার বেশীরভাগ রাজনীতিগত হলেও সর্বাধিক ভুইত্তামারা পোস্টার গুলো হলো চলোচিত্রের পোস্টার।

"পুড়ে যায় মন"  টাইপ নামের একটা মুভি পোস্টার দেখলাম যেখানে বিশাল পোস্টারের দুই তৃতীয় অংশ জুড়ে নাইকা পরিমনি চার ইঞ্চি ব্যাসার্ধের মিনি হাফ প্যান্ট পিন্দা মটরবাইক এর উপর বইসা ললিপপ চুষে আর আরেক হাতে অন্য একটা ললিপপ ধইরা আছে (পুরাই গ্যাং ব্যাং ব্যাপার সেপার)। পুড়ে যায় মন নামের সাথে এই ছবির ব্যাবহারের সামান্য কারন বুঝে উঠতে পারলাম না। নাম যদি হত "গিভ মি মাই ললিপপ", তাহলে ব্যাপারটা যেতো বেশী। আর এক পোস্টারে দেখলাম পরি আপার চেহারার থেকে কোমর ও বগল বেশী দেখা যায়, আর বিগ ব্রাদার নামের এক মুভির পোস্টারে দেখলাম মাহিয়া মাহি গোলাপি এক খন্ড নাইটি পিন্দা টাইনা ধইরা শুইয়া আছে।

মাঝে যখন চলচিত্রের কালো অধ্যায় চলছিলো তখন আমরা এ সব টাইপ সস্তা রস সমৃদ্ধ পোস্টার অবাধে দেখতাম, কিন্তু পাত্তা দিতাম না। কিন্তু আবার এই চলচিত্রের দিন বদলের সময়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নির্মাতারাও আবার যখন পুরানো ফর্মুলায় চলে যেতে চায় তখন ভালো লাগে না। অন্তত মুভির জন্য একটা রুচি সম্মত পোস্টার তো তারা বানাতেই পারে। যা আমাদের অনেক নির্মাতা করে দেখিয়েছেনও। তবে বাকিরা অয়ারবেনা কেনো!!!

যে কোন চলচিত্র শিল্পের জন্য চলচিত্রের পোস্টার অত্যান্ত দরকারি অস্ত্র। এর শিল্প মান পারে একটি কম বাজেটের কম প্রচারনা প্রাপ্ত চলচিত্রকে সকলের সামনে আকর্শনীয় করে তুলতে। আমাদের দেশের সত্তুরের বা আশির দশকের চলচিত্র গুলোর পোস্টারের শিল্পমান ছিলো অনেক উচ্চমানের। বর্তমানে কিছু সংখ্যক নির্মাতা হয়তোবা চেষ্টা চালিয়েছে কিন্তু তার মাঝে অনেক ক্ষেত্রেই কপি পেস্টের প্রবনতার দেখা মিলে। তবু যাই হোক, চাই আমাদের চলচিত্র ছড়িয়ে পরুক আরো ব্যাপকতা নিয়ে। কারন আমাদের নতুন নির্মাতা মুখ গুলোর চোখে এক টুকরা আগুনের দেখা মিলছে দিনকে দিন। তাতেই নাহয় পুড়ে যায় চলচিত্র নিয়ে আমাদের মনের হতাশা গুলো।

# BanglaFilmPoster #poster #Film

রবিবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৭

শান্তির খোজে যাত্রায়

আমি বাসে করে যতটা সময় কাটাই ততটা সময় যদি কোন ফর্মুলা ওয়ান ড্রাইভার প্র‍্যাক্টিস করতো তার চাদে পৌছে যেতে খুব বেশী দিন লাগতো না।

বাসে এই জার্নি  করে বেড়ানোর কারনে আমার ডাক নাম কুড়িয়ার সার্ভিস হয়ে গিয়েছিলো বন্ধুমহলে। জার্নি ব্যাপারটা আমার খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করে না। আমি বিব্রতকর ভাবে মুখ হা করে যখন তখন বাসে ঘুমিয়ে এক্সাবার ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছি। সময় মত দেহের এলার্ম সিস্টেম আমাকে জাগিয়ে রাখে। কিন্তু সমস্যাটা হয় ভর দুপুরে বাসে চড়ে বসলে। ঘুমানী তখনো খুব একটা কষ্টের কিছু না কিন্তু সেই সময়টায় বাসের অপর যাত্রীরা আমার হা করে থাকা ঘুমন্ত ব্লাক হোলের দিকে তাকিয়ে থাকবে তা আমার খুব একটা পছন্দের বিষয় না। চাই না আমার নুরানী চেহারা খানা কোন ফেসবুক পেজ এর ফটোকমেন্ট বা ফটো ট্রোল হয়ে পরিসমাপ্তি হোক। তাই ক্লিপ বাইন্ধা হইলেও চোখ খুইলা রাখি। ক্লিপ জয়ুতু।

এই যাত্রা পথে আমার সময় কাটানোর সব থেকে প্রিয় বিষয় হলো নিজেকে একজন।ক্রিয়েটিভ ব্যাক্তি ভেবে নানা মুখি ক্রিয়েটিভ চিন্তা করা। বাসে ঝিমাইতে ঝিমাইতেই আমি অনেক স্ক্রিপ্ট ও বহু প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত ৪র্থ মাত্রার ফেসবুক স্ট্যাটাস সাজিয়েছি। মানুষে পাত্তা।না দিলেও আমি মনে সিরাম শান্তি অনুভব করেছি। এমন ক্রিয়েটিভ সিব ব্যাপার যখন মাথায় আসে না তখন আপাতত গান শুনে বা মানুষের অনলাইন কৃত্তিকালাপ দেখে সময় পাড় ছাড়া কোন উপায় থাকে না। মাঝে মাঝে অবশ্য ট্রাফিক জ্যাম এর সার্কাস ও দেখার চেষ্টা করি। কিন্তু তা আমার চোখের ক্লিপ খুইলা ফেলার চেষ্টা করে দেখে আপাতত তার থেকে সাবধান থাকার চেষ্টা চালাই।

এমন অবস্থায় আমার অন্যতম প্রিয় কাজ হচ্ছে আশে পাশের মানুষ দেখা বা মানুষ খুজে বেড়ানো। দুইটা জিনিসই আমি ছোট কাল থেকে পছন্দ করি। আমার না লেখা হাজার গল্পের লক্ষ লক্ষ চরিত্র আমাকে ঘিরে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে ভাবতেই ভালো লাগা সৃষ্টি হয়। মানুষ খুজে বেড়ানোর মাঝে অন্যতম প্রধান মহা হচ্ছে তাদের মাঝে লুকিয়ে থাকা সৌন্দর্য খুজে পাওয়া। সভাবতই আমি রাসায়নিক বা মানুষিক বিক্রিয়া ঘঠিত (মানুষিক বিকৃতি নহে) কারনে অপর লিঙের সৌন্দর্য খুজে পেতেই ভালো লাগে বেশী। ভাই বিশ্বাস রাখতে পারেন আমি কওন কুনজর বা খারাও ঊদ্দ্যেশ্য নিয়ে তাকাই না। বিশ্বাস করা না করা আপনাদের ব্যাপার।

এটা আশ্বস্ত করতে পারি। আমি চোখে চোখে রেপ করে ফেলার মানুষ না। আর এতো পার্ভাট ও না যে মেয়ে মানুষের দেহ অবলোকন এর অপেক্ষায় বুভুক্ষ কাটাই। মাঝে মাঝে এমন সুন্দর মূহূর্ত গুলো আমি কিছু পুরুষ মানুষদের মাঝেও দেখি তখন সেই সৌন্দর্য  টুকুও অনুভব করার চেষ্টা করি। আবারো বলতেছি আমি ওই টাইপের ছেলেও না। সেই একই ব্যাপার বিশ্বাস করা না করা আপনাদের ব্যাপার।
আমি নিজেকে আগেই জোড় পূর্বক প্রতিভাধর সৃষ্টিশীল মানুষ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা চালিয়ে ফেলেছি। প্রতিভার মাত্রা নিন্ম মানের হলেও আমি সন্তষ্ট। তাই আমি নিজেকে আরো ভাবুক ও সৃষ্টিশীল ভাবতে মানুষ ও মানুবিক সৌন্দর্য নিয়ে ভাবনার ব্যকুল চেষ্টা করি। কখনো কারো ঠোটের কোনার এক টুকরো হাসির ছায়ায় আমার ভাবনা আটকে যায়, কখনোবা কারো চোখের এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখায় আমার চোখ আটকে যায়। কিছু সময় হয়তো আমি গাড়ির চলন্ত বাতাসে ঊড়তে থাকা কারো চুল নিয়ে গল্প বেধে ফেলি।

আজ যেমন আমি বাজার থেকে ভেজা চুল নিয়ে এক জোড়া বিষন্ন চোখ আমার সোজা মহিলা সিটে বসে ছিলো। জানি না বারবার সে কোথায় হারিয়ে যাচ্ছিলো। তবু নিষ্পাপ চাহনিতে আমিও বিষন্ন হয়ে গেলাম। শুধু তাকিয়ে থাকা তার ব্যাস্ত দুই চোখের প্রশ্ন গুলোর মাঝে। সেই প্রশ্নর উত্তর হয়তো আমাদের বিসিএস প্রশ্ন কমিটিও জানেনা। বার দুই শুধু আমার বিষন্ন চাহনির দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাত মাঝ রাস্তায় কোথায় হারিয়ে গেলো। তাকিয়েও দেখলো নাবতার খুজতে থাকা প্রশ্নের উত্তর গুলো এক জোড়া অপরিচিত চোখো খুজে বেড়াচ্ছে। হয়তো এক টুকরো শান্তির খোজে।